হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর সিলগালা করা স্ট্রংরুমের ভল্টের তালা ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় সেখান থেকে কয়েকটি অস্ত্র চুরির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের দায়িত্বে থাকা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এ বিষয়ে বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে। যদিও জিডিতে অস্ত্র খোয়া যাওয়ার কথা উল্লেখ নেই, তবে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে—স্ট্রংরুম থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ কিছু মালামাল হারিয়ে যেতে পারে।
এর আগে, গত ১৮ অক্টোবর শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে বড় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। তাতে আমদানির কার্গো কমপ্লেক্স সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। তবে অগ্নিপ্রতিরোধী স্ট্রংরুমের কোনো সামগ্রী বা নথিপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে বিমানবন্দর সূত্র জানায়। ওই স্ট্রংরুমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য আমদানি করা কিছু আগ্নেয়াস্ত্রও রাখা ছিল।
পরে ২৪ অক্টোবর বিকেলে কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার নেয়ামুল, বিমানের জিএম (কার্গো) নজমুল হুদা এবং এনএসআইয়ের অতিরিক্ত পরিচালক ফিরোজ রব্বানীর উপস্থিতিতে স্ট্রংরুমের সব মালামালের তালিকা তৈরি করা হয়। এরপর সবার উপস্থিতিতে মালামালগুলো ভল্টে রেখে তালা লাগিয়ে সিলগালা করা হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) মো. জামাল হোসেন তার জিডিতে উল্লেখ করেন, ২৭ অক্টোবর রাত ৯টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত পুলিশ ও আনসার সদস্যরা স্ট্রংরুমকে সিলগালা অবস্থায় দেখতে পান। কিন্তু পরদিন ২৮ অক্টোবর সকাল ৭টা ৭ মিনিটে ডিউটি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম খান লক্ষ্য করেন, স্ট্রংরুমের তালা নেই। পরে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে বিমান নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও ডিউটি অফিসাররা ঘটনাস্থলে গিয়ে ভল্টটি তালা ভাঙা অবস্থায় পান।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাস্থল থেকে তালা কাটার সরঞ্জামসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে সিআইডির ফরেনসিক দল। তারা পিস্তলসহ কিছু মূল্যবান জিনিসও জব্দ করেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, স্ট্রংরুমের তালা ভাঙার বিষয়ে একটি জিডি হয়েছে। তবে অস্ত্র খোয়া যাওয়ার কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, অস্ত্র খোয়া যাওয়ার অভিযোগের বিষয়টি তদন্তাধীন। যদি সত্যিই কোনো অস্ত্র বা সামগ্রী চুরি হয়ে থাকে, তাহলে দায়ীদের আইনের আওতায় আনা হবে।