শনিবার, ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫১ অপরাহ্ন

তানজানিয়ায় নারী প্রেসিডেন্ট হলেন সামিয়া সুলুহু হাসান

দিগন্তের বার্তা ২৪ ডেস্ক : / ১৩ বার পঠিত
আপডেট : শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ৫:৫৯ অপরাহ্ণ

বিতর্কিত নির্বাচনে ৯৮ শতাংশ ভোটে জয় পেয়ে ফের তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট হলেন সামিয়া সুলুহু হাসান।

শনিবার (১ নভেম্বর) নির্বাচন কমিশনের প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা গেছে, সামিয়া ৯৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়ে দেশের প্রায় সব নির্বাচনী এলাকায় জয়লাভ করেছেন।

তবে, নির্বাচনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীরা প্রতিযোগিতা থেকে বাদ পড়ায় ভোটের বৈধতা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।

রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, শনিবারই তার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।

গত বুধবার অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তানজানিয়ার রাজধানীসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ ও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, সরকারের নির্দেশে প্রেসিডেন্ট সামিয়া প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীদের ভোট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং সারা দেশে ভিন্নমত দমন অভিযান চালানো হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, নির্বাচনের দিনই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কিছু বিক্ষোভকারী সামিয়ার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন, সরকারি ভবনে আগুন ধরিয়ে দেন। আর পুলিশ টিয়ারগ্যাস ও গুলি চালায় জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে।

প্রধান বিরোধী দল চাদেমার পক্ষ থেকে এএফপিকে জানানো হয়, তাদের সংগৃহীত হাসপাতাল ও ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, প্রায় ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন।

অন্যদিকে জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তর জানায়, তিনটি শহরে অন্তত ১০ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে, যা ‘বিশ্বাসযোগ্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

তানজানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ থাবিত কম্বো আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী কোনো অতিরিক্ত শক্তি ব্যবহার করেনি। নিহতদের বিষয়ে সরকারের কাছে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য নেই। আমি কোথাও ৭০০ মৃতদেহ দেখিনি।

২০২১ সাল পর্যন্ত সামিয়া সুলুহু হাসান তানজানিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। সে সময় দেশটির প্রেসিডেন্ট জন মাগুফুলির মৃত্যু হলে সামিয়া রাষ্ট্রপ্রধান হন। গত অক্টোবরের ভোটে তিনি ১৬টি ছোট দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

অভিযোগ আছে, সামিয়ার প্রধান বিরোধী দল চাদেমার নেতা তুন্ডু লিসুকে দীর্ঘদিন ধরে কারাগারে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে, যদিও তিনি তা অস্বীকার করেছেন। অপর এক বিরোধী নেতা লুহাগা ম্পিনাকেও নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়নি।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, নির্বাচনের আগে হাসানের সরকার ‘ভয় ও নিপীড়নের শাসন’ কায়েম করেছিল। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় হাই প্রোফাইল অপহরণের ঘটনা বেড়ে যায়।

যদিও সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এদিকে তানজানিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতেরেস। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, তানজানিয়ায় চলমান পরিস্থিতি, বিশেষ করে বিক্ষোভে হতাহতের খবর আমাদের গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করছে।

প্রেসিডেন্ট সামিয়া হাসান এখন পর্যন্ত চলমান সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনায় কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য করেননি।

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরও খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর