মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:০৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সংবাদ শিরোনাম :
বিদেশে হাজার কোটি টাকার প্রোপার্টি—অর্থ পাচারের তদন্তে সিলেটের ফকর ব্রাদার্সের দুই কর্তা চট্টগ্রামে সম্পন্ন হলো ‘১ম আন্তঃ যুব রেড ক্রিসেন্ট বিতর্ক চ্যাম্পিয়নশীপ–২০২৫’ বিএনপি ক্ষমতায় এলে শিক্ষিত ভাইদের বেকার সমস্যা দূর করা হবে-শাহ্ নাওয়াজ নানান ষড়যন্ত্র ও নাশকতা করে দেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা হচ্ছে-সাবেক চীফহুইপ ফারুক বিএনপি যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই হাতিয়ার উন্নয়ন ঘটে কারীমুল হাই নাঈম বিয়ে বাড়ির দাওয়াতকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাদের উপর হামলার ঘটনায় মানববন্ধন লালন সাঁইয়ের ১৩৫তম তিরোধান দিবসে জাতীয় মঞ্চে বেরোবির ‘টঙের গান’ প্রাণনাশের হুমকি আহনাকে পুত্রসন্তানের মা হলেন পরিণীতি চোপড়া জামায়াত, ইসলামী আন্দোলন ও খেলাফত মজলিসসহ কয়েকটি দলের যুগপৎ আন্দোলন

বিদেশে হাজার কোটি টাকার প্রোপার্টি—অর্থ পাচারের তদন্তে সিলেটের ফকর ব্রাদার্সের দুই কর্তা

দিগন্তের বার্তা ২৪ ডেস্ক : / ৪০ বার পঠিত
আপডেট : মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫, ৪:৫৬ অপরাহ্ণ

মমতাজ উদ্দিন খোকন: সিলেটের প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ফকর ব্রাদার্সের দুই কর্তা — পিতা ও পুত্র — সংযুক্ত আরব আমিরাতে গড়ে তোলা উচ্চমূল্যের প্রোপার্টি ও গোপন বিনিয়োগকে কেন্দ্র করে এনবিআরের বিশেষ তদন্তের নজরে রয়েছেন। প্রথম দফায় পাওয়া তথ্য ও অভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, কয়লা ও পাথরের আড়ালে অংশ করে দুই কর্তা দুবাইয়ে কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ ও সম্পদ সৃষ্টি করেছেন, যা দেশের আয়কর নথিতে সঠিকভাবে প্রতিফলিত করা হয়নি বলে তদন্তকারীরা মনে করছেন।

তথ্যসূত্রে বলা হয়েছে, দুবাইয়ের জুমেইরাহ ভিলেজ সিটিতে (প্লট নং-৬৮১৬৪৮১) ৯৫০ বর্গমিটার জমির ওপর ৩৩ তলা বিশিষ্ট ‘সাফায়া ৩২’ নামে একটি টাওয়ার নির্মাণ করা হচ্ছে; ভবনটি দার আল কারামা নামের একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানির আওতাভুক্ত। এই কোম্পানির যৌথ অংশীদার হিসেবে নাম রয়েছে ফকর উদ্দিন আলী আহমেদ ও তার পুত্র ফকরুস সালেহিন নাহিয়ান। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে — ভবনে মোট ২২৪টি অ্যাপার্টমেন্ট থাকবে, যেখানে একক শোবার ঘরের মূল্যও বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় পৌনে দুই কোটি টাকায় শুরু।

আয়কর ও অনুসন্ধান:
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ইউনিট (সিআইসি) ইতোমধ্যে ফকর ব্রাদার্স সম্পর্কিত ১৭ জন ও একাধিক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে। জানুয়ারি মাসে সিআইসির একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দল দুবাই গিয়েছিল; ওই সফরের রিপোর্টে ফকর ব্রাদার্সসহ শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে। সিআইসির প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে—২০১৭-১৮ অর্থবর্ষ থেকে পাথর ও কয়লা আমদানির নামে আয় দেখিয়ে সারচার্জ ও সম্পর্কিত জরিমানা এড়াতে মোট মিলিতভাবে প্রায় ৫০ কোটি টাকার আয়কর ফাঁকির আশঙ্কা আছে। তদন্তে ফকর উদ্দিন আলী আহমেদ, ফালাহ উদ্দিন আলী আহমেদ, সালাহ উদ্দিন আহমেদ, ফয়েজ হাসান ফেরদৌস ও ফকরুস সালেহিন নাহিয়ানসহ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

ফকরুস সালেহিন নাহিয়ান গনমাধ্যমকে বলেছেন, দুবাইয়ের প্রকল্পটিকে তারা ‘ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি’ হিসেবে দেখেন; বাংলাদেশ থেকে ওই প্রকল্পে সরাসরি টাকা পাঠানো হয়নি, তারা কেবল বিক্রির পার্টনার হয়েছেন এবং ২০২৪ সালের ২ জুলাই চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে — তাই আয়কর আইনের শর্তানুযায়ী এখনও সবকিছু দাখিল করার সুযোগ রয়েছে। তিনি আরও দাবি করেন যে দেশি কোনো আয়ের তালিকায় তাদের সংশ্লিষ্টতা ভুল করে দেখানো হয়েছে এবং তা সংশোধনের সুযোগ আছে।

সূত্ররা বলছেন, প্রাথমিক প্রমাণে কর ফাঁকির অনিবার্য চিহ্ন দেখা গেছে; তদন্ত এখনও চলমান। তবে সংস্থাটি অনুসন্ধান থামাতে বিভ্রান্তকরণ ও মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর চেষ্টা করছে, এমন অভিযোগও রয়েছে। তদন্ত চলাকালে বিভিন্ন স্তরের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের শিদ্ধান্তহীন তদবিরের কথাও তদন্তকারীরা উল্লেখ করেছেন।

আয়কর আইনে স্পষ্ট করা আছে—বিদেশে থাকা সম্পদ রিটার্নে প্রদর্শন না করলে জরিমানা ও অন্যান্য আইনি পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে। আয়কর আইনের ২১ ধারায় বিদেশি সম্পত্তি অপ্রদর্শিত থাকলে উপ-কর কমিশনার সেই সম্পত্তির বাজার মূল্যের সমপরিমাণ জরিমানা আরোপ করতে পারবেন; তবে জরিমানার পূর্বে করদাতাকে যুক্তিসংগত শুনানি দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। প্রয়োজনে বিদেশে গিয়ে তদন্ত ও সম্পত্তির মূল্য নির্ধারণের বিধানও রয়েছে।

এদিকে, সংস্থাটি তাদের অবস্থান রক্ষা করলেও অনুসন্ধানকারীরা বলছেন—অর্থ স্রোত ও বিনিয়োগের উৎস নিয়ে পরিষ্কার ব্যাখ্যা না দিলেই এখান থেকে আইনগত জটিলতা অটল। এনবিআর ও সিআইসি যে সতর্কভাবে এ ঘটনার অনুসন্ধান চালাচ্ছে, তা দেশের করদায়িত্ব ও আন্তর্জাতিক আর্থিক জবাবদিহিতার ক্ষেত্রে গুরুত্ব বহন করে। এই অনুসন্ধান শুধু এক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে নিয়ে সীমাবদ্ধ থাকছে না—এটি দেশের বাইরে থাকা সম্পদের স্বচ্ছতা ও করের ন্যায়পরায়ণতা চালিয়ে নেওয়ার একটি বড় ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তদন্তে নতুন তথ্য হাতে এলে সংশ্লিষ্ট পক্ষের প্রতিক্রিয়া ও এনবিআরের চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিয়ে পরবর্তী রিপোর্ট প্রকাশ করা হবে।

শুধু তাই নয়,অনুসন্ধানে গেলে আরো জানা যায়,
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সাবেক সভাপতি ফখর উদ্দিন আলী আহমেদ দায়িত্বে থাকা অবস্থায় নানা আর্থিক অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটি ধীরে ধীরে আস্থা হারায়। তার আমলে নেওয়া অনেক সিদ্ধান্ত স্টক এক্সচেঞ্জের ভাবমূর্তি নষ্ট করে দেয়। বর্তমানে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি ও দুবাইয়ে অর্থ পাচারের অভিযোগের তদন্ত চলছে।

আরো জানা যায়,ফকর ব্রাদার্সের দুই কর্তা বাপ বেটার সাথে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ এর সাথে ব্যাপক সখ্যতাও রয়েছে,এদিকে পাচারকৃত অর্থের পেছনে মূল কারিগর ছিলেন স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ এর উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এবং ক্রিকেট ব্যাটিং এর সাথেও সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় ফকর ব্রাদার্সের এ দুই কর্তার বিরুদ্ধে।

এদিকে বিবিসিনিউজ টুয়েন্টি ফোর এর অনুসন্ধানী প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্ত ফখর উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার নিজ মালিকানাধীন পাঁচতারকা হোটেল স্টার প্যাসিফিকে অবস্থান করছেন। সেখানে যোগাযোগ করতে গেলে হোটেল ম্যানেজার জানান, “স্যারের সঙ্গে সাক্ষাৎ বা যোগাযোগ করানোর অনুমতি আমাদের নেই।” ম্যানেজার আরও বলেন, “তার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর দেওয়া আমাদের জন্য নিষিদ্ধ।”

বাপ বেটার দূর্ণীতে নিয়ে আসছে ২য় পর্ব…

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরও খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর