নিউজ ডেস্ক: বৃদ্ধ বাগু মিয়া(৬৭) বিগত ২৪/২৫ বছর যাবৎ পটিয়া উপজেলার জিরি ইউনিয়নের নোয়াপাড়া নিবাসী জনৈক হাজি আবুল কাসেমের বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসাবে কর্মরত আছেন। যেহেতু হাজি সাহেব পরিবার নিয়ে শহরে বসবাস করে থাকেন তাই গ্রামের এই বাড়িসহ নিকটবর্তী ফসলী জমি দেখাশুনা করে থাকেন উল্লেখিত বাগু মিয়া।
বিগত কিছুদিন যাবৎ উক্ত এলাকায় বেশ কিছু নতুন নতুন ভাড়াটিয়া এসে থাকছেন যাদেরকে এলাকায় দেখা যায়নি। এখানে উল্লেখ্য যে হাজী আবুল কাসেমের বাড়ীটি কিছুটা এতিহ্যবাহী এস এ নূর হাই স্কুলের দক্ষিণে অবস্থিত হওয়ায় প্রায়ই ছাত্র-ছাত্রীরা চলার পথে কিছু বখানে তরুণ বাড়ীটির আশে পাশে দোকান বসে আড্ডা দেন এবং ছাত্রীদের উৎপাত করে থাকেন। হাজী সাহেবের বাড়ী ও যেহেতু রাস্তার পাশে তাই বখাটেরা প্রায়ই বাড়িতে ঢুকে এটা সেটা নিয়ে যেত।
এতে বাগু মিয়া বাধ্য হয়ে তাদের বাধা দিত বা মাঝে মধ্যে বগাঝকা ও দিত। ঘটনার দিন উক্ত বখাটে ছেলেদের এক ফ্যামিলির প্রায় ১৫০টির মত হাঁস হাজী সাহেবের মালিকানাধীন ফসলী জমিতে ছেড়ে দিলে উক্ত জমিতে রোপণ করা প্রায় সব ধানের চারা নষ্ট হয়ে যায়।
এত বাগু মিয়া হাঁসগুলো তাড়িয়ে দিয়ে নিভৃত করতে চাইলে উক্ত বখাটে ভাড়াটিয়া ছেলেদের এক ফ্যামিলির মা(রোকেয়া বেগম-৩ নং আসামী),ছোট ছেলে শাহেদ(২ নং আসামী) এবং এলাকার কিশোর গ্যাং এর অন্যতম সদস্য জাকেরুল্লাহ(১ নং আসামী) উক্ত নষ্ট হওয়া জমিতেই এলাপাথাড়ি গাছের তক্তা, রডসহ বিভিন্ন গাছ-গাছালি দিয়ে বৃদ্ধকে ইচ্ছামত পিটাতে থাকে। এতে আশে পাশের লোকজন এগিয়ে এসে সাময়িক মীমাংসা করে দিলে বাগু মিয়া কোন রকমে বাড়িতে এসে হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন।
কিন্তু বৃদ্ধের ব্যথা বেদনা বেশী লাগলে কয়েকজন পরামর্শ দিলে আপাততঃ কিছু মলম বা প্যারাসিটামল নিতে অনতি দূরে শরীফ মার্কেটস্থ(গাজা মার্কেট নামে সমধিক পরিচিত) ফার্মেসিতে যাওয়ার পথে(জনৈক আনোয়ার মাস্টারের বাড়ীর সামনে) পূর্ব থেকেই উৎপেতে থাকা উক্ত জাকেরুল্লাহ(১ নং আসামী) তার কিশোর গ্যাং এর দলবল নিয়ে উপোর্যপরি পূর্ব থেকেই আহত বাগু মিয়াকে বিভিন্ন ধারালো দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে বৃদ্ধের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কোপাতে থাকে। কিশোর গ্যাং এর সদস্যারা পুরা ঘটনায় উপস্থিত থাকায় এলাকাবাসীর কেউ তৎক্ষণাত এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি। পরে বৃদ্ধ বাগু মিয়া গুরুত্বর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে জাকেরুল্লাহ ও তার কিশোর গ্যাংএর সদস্যারা সরে পড়ে।
পরে এলাকার কয়েকজন মিলে আহত ও রক্তাক্ত বৃদ্ধকে প্রথমেই শান্তির হাটস্থ মেটারনিটি জেনারেল হসপিটাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে উন্নত চিকিৎসার জন্য রক্তাক্ত বৃদ্ধকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পাঠিয়ে দেন। উক্ত ঘটনা বর্ননা করে থানায় প্রাথমিক এজাহার দায়েক করেন বৃদ্ধের ছেলে আবু বক্কর(২৭)। পটিয়া থানার ওসি মোঃ নুরুজ্জামান বলেন অতি সত্বর আসামীদের গ্রেফতার করা হবে আর এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা হলেন মোঃ কামরুজ্জামান। তিনি বলেন যে এই ঘৃন্য অপরাধীদের শীঘ্রই গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনা হবে যতই চাপ থাকুক না কেন!
কিন্তু ভুক্তভোগীর স্বজন ও এলাকাবাসীর দাবী ঘটনার মূল হোতাসহ কিশোর গ্যাং এর সকল সদস্যকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা জরুরী। না হলে এই ধরনের ঘটনা আরো ঘটতে পারে এবং এত এলাকায় আইনশৃংখলা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে বলে তারা আশংকা প্রকাশ করেন। এখানে আরো উল্লেখ্য যে উক্ত কিশোর গ্যাংএর অন্যতম নিয়ন্ত্রক হচ্ছে মাকসুদুল হক রিপন, মোঃ আনিস ও মোঃ রাশেদসহ আরো অনেক।
ঘটনার প্রায় দশদিন অতিবাহিত হলেও এখনো অপরাধীরা গ্রেফতার না হওয়ায় এলাকাবাসী হতাশ প্রকাশ করে বলেন এই কিশোর গ্যাংএর পেছনে নিশ্চয় কোন বড় অপরাধী আছেন এবং তাকে ও আইনের আওতায় আনার দাবী জানান তারা।