ছোটন চৌধুরী, মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি: মাটিরাঙ্গায় প্রথম বারের মতো মালচিং পদ্ধতিতে মাচায় বানিজ্যিকভাবে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে সফলতা পেয়েছেন কৃষক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। মার্সেলো জাতের এসব তরমুজ এখন বাজারজাতের সময় হয়েছে। একই সঙ্গে বেশি লাভের আশা করছেন তিনি। চাষাবাদকে বহুমুখীকরণসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পুষ্টির মান বৃদ্ধিতে সার্বিক সহযোগিতা করছে বেসরকারী সংস্থা ইন্ট্রিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (আইডিএফ)।
চলতি মৌসুমে আইডিএফের সহযোগিতায় মাটিরাঙ্গা পৌরসভার চরপাড়া এলাকায় প্রথম বারের মতো ২৫ শতাংশ জায়গায় গ্রীষ্মকালীন তরমুজ (মার্সেলো) চাষ করেন কৃষক জাহাঙ্গীর হোসেন। ইতিমধ্যে মাচায় মাচায় তরমুজের ফলন এসেছে। সঠিকভাবে বাজারজাত করতে পারলে লাভের আশা করছেন এই চাষি।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, ‘বেসরকারি সংস্থা আইডিএফ’র সহযোগিতায় প্রথমবারের মতো ২৫শতাংশ জমিতে মাচা তৈরি করে মালচিং পদ্ধতিতে এবছর তিনি অমৌসুমি তরমুজ চাষ করেছেন। ফলনও বেশ ভালো এসেছে। এ তরমুজ চাষে সার, বীজ, মাচা ও নেটসহ প্রতি বিঘা চাষ করতে খরচ হয়ে মাত্র ৩০ হাজার টাকা। সঠিক বাজারজাত করতে পারলে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার তরমুজ বিক্রির আশা করছেন তিনি। তার দেখাদেখি তরমুজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন অনেকেই।
স্থানীয়দের মতে, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের উদ্যোগে বেকার যুবকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অমৌসুমি মার্সেলো জাতের এই তরমুজ চাষ পদ্ধতি শেখানো হলে এবং বীজ ও সার্বিক সহযোগিতা করা হলে বেকারত্বের হার অনেকাংশ কমে যাবে। এতে করে একদিকে যেমন কর্মসংস্থান হবে অন্যদিকে খড়া সিজনে স্থানীয় ভাবে তরমুজের চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা সম্ভব হবে। তাতে কৃষক ও দেশ লাভবান হবে।
আইডিএফের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আজমারুল হক বলেন, ‘পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) কৃষি খাতের অর্থায়নে ও ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (আইডিএফ) কৃষি উন্নয়ন বিভাগের বাস্তবায়নে মাটিরাঙ্গায় পরীক্ষামূলকভাবে ২৫ শতাংশ জমিতে মাচা পদ্ধতিতে অমৌসুমী (মার্সোলো) জাতের তরমুজ চাষের প্রদর্শনী দেয়া হয়েছিল। ফলনও খুবই ভালো এসেছে। আমরা কৃষককে সার, বীজ, বালাইনাশক ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। ভবিষ্যতে কৃষি বিভাগের সাথে সমন্বয় করে তরমুজের বানিজ্যিক চাষাবাদের বিকাশ হবে’।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সবুজ আলী জানান, এ প্রথম মার্সেলো জাতের তরমুজ চাষ করা হয়েছে। পরিক্ষামূলকভাবে দেখেছি এ জাতের ফলন খুব ভালো ও কৃষক লাভবান হবেন। আমাদের পক্ষ থেকে কৃষকদের প্রযুক্তিগত জ্ঞানসহ সার্বিক সহযোগীতা দেওয়া হবে’। এই তরমুজ চাষ সম্প্রসারণ করা গেলে কৃষি অর্থনীতিতে বিরাট পরিবর্তন আসবে বলে মনে করছেন তিনি।