মোঃ মোস্তফা চৌধুরী (গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি): বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার চর শরিকল গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ হাওলাদারের ওয়ারিশদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জাল করে জমি বিক্রির সময় প্রতারকদের হাতেনাতে ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতারকদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রতারণার বিস্তারিত
অনুসন্ধানে জানা গেছে, একটি প্রভাবশালী ভূমি খেকো চক্র প্রতারণার মাধ্যমে ভুয়া মালিক সেজে সন্ত্রাসীদের দিয়ে জমি দখল করে বিক্রির পাঁয়তারা করছিল। ঢাকা জেলার তুরাগ থানার রানা ভোলা মৌজার ১১১১ নম্বর দাগে ৪ (চার) একর জমি স্থানীয় ভূমিদস্যু হাসেম চেয়ারম্যানের ছেলে মহিবুল হাসান গং দখল করে নেয়। এই জমির প্রকৃত মালিক ছিলেন বরিশালের আব্দুর রশিদ হাওলাদার। তার মৃত্যুর পর তার চার পুত্র – ১. মো. সেলিম হাওলাদার (এনআইডি নং ৩৭২৫৫৭৯১৭৫), ২. মো. জাহাঙ্গীর হাওলাদার (এনআইডি নং ২৮২৫৫১২৩৭৫), ৩. আলমগীর হাওলাদার (এনআইডি নং ০৬১৩২৯৪৫২৬৭৬৫), এবং ৪. বুলবুল হাওলাদার (এনআইডি নং ২৬৯৪৮১৩৬০২৯৭২) জমির মালিক হন।
এলাকার প্রভাবশালী হাসেম চেয়ারম্যানের ছেলেরা অবৈধভাবে জমি দখল করে একটি কুচক্রী মহলের মাধ্যমে প্রকৃত জমির মালিক মো. সেলিম হাওলাদার গংদের জাতীয় পরিচয়পত্র জাল করে। জাতীয় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তার সহযোগিতায় ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে তারা বিভিন্ন মহলে জমি বিক্রির উদ্দেশ্যে ব্যবহার করে।
ক্রেতার কাছে প্রতারণার চেষ্টা ও পুলিশের হাতে ধরা
ভুয়া মো. সেলিম হাওলাদার পরিচয়ে জমি বিক্রির খবর পেয়ে আব্দুল মালেক নামে এক ব্যক্তি জমি কিনতে যোগাযোগ করেন। পিয়ার হোসেন, নাসির, আব্দুল মান্নান, রব, নিরু, ও গুলজার হোসেন কেনাবেচার মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। তারা ৫৫ কোটি টাকায় পুরো জমি বিক্রির দফারফা করে। বিক্রির বায়না বাবদ ৫ কোটি টাকার টোকেন মানি নিতে ভুয়া মো. সেলিম হাওলাদারকে সঙ্গে নিয়ে ঢাকার মগবাজারের ভর্তা ভাত হোটেলে বসেন। ক্রেতা আব্দুল মালেকের সঙ্গে আগেই প্রাথমিক লেনদেনের কথা হয়েছিল।
এই খবর পেয়ে প্রকৃত সেলিম হাওলাদারের ছোট ভাই আলমগীর হাওলাদার সেখানে উপস্থিত হন। জমি বিক্রি করতে আসা সেলিম প্রকৃত মালিক নন বলে আলমগীর আপত্তি করেন। এ সময় ভুয়া সেলিম তার ভোটার আইডি কার্ড দেখিয়ে নিজেকেই প্রকৃত সেলিম দাবি করেন। ক্রেতা আব্দুল মালেক পরিস্থিতি খারাপ দেখে ডিবি পুলিশকে খবর দেন। ডিবি পুলিশ এসে সেলিম হাওলাদারের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ভুয়া জমির মালিক সাজার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করে।
মামলা ও তদন্ত
ঐ দিনই রমনা থানায় আলমগীর হাওলাদার বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন, যার মামলা নম্বর ২৬(১২)২০। এ বিষয়ে আলমগীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, যাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন তারা তার ভাইয়ের জায়গার কাগজপত্র জালিয়াতি করে বিক্রি করে দিচ্ছিলেন। তার ভাই সেলিম বরিশালের গ্রামের বাড়িতে থাকেন। আলমগীর তার ভাইয়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের একটি কপি প্রতিবেদককে দেন।
ওই কপি নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) শাখায় যোগাযোগ করে দেখা যায়, প্রকৃত সেলিম হাওলাদারের এনআইডি নম্বর ৩৭২৫৫৭৯১৭৫, পিতার নাম মৃত মো. রশিদ হাওলাদার, মাতা মৃত রাহেলা বেগম – এই তথ্যের সঙ্গে সফটওয়্যারে থাকা তথ্যের হুবহু মিল রয়েছে। অপরদিকে, জমির মালিক সেজে আসা সেলিমের এনআইডির সফটওয়্যারে তথ্যের মিল থাকলেও এনআইডি নম্বর ও জন্ম তারিখে ভিন্নতা রয়েছে। তার এনআইডি নম্বর ৪৬৫৫৪৭০৭৩২ এবং জন্ম তারিখ ১২ ডিসেম্বর ১৯৫৫ সাল। সেখানে তার নাম দেওয়া আছে আ. মোতালেব শিকদার, পিতা – মান্নান শিকদার, মাতা – আয়াতুন্নেছা, ঠিকানা মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাঁশকান্দি গ্রামে।
গ্রেফতার ও চলমান প্রক্রিয়া
আলমগীরের দায়ের করা মামলায় ছয় জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে তাদের চার ভাইয়ের এনআইডি কার্ড জাল করা হয়েছে। এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনার মহা পরিচালক বরাবর আবেদন করা হয়েছে।
পিবিআই তদন্তে এনআইডি কার্ড সৃজন করার অপরাধে প্রতারক মো. মোতালেব শিকদার, মো. পিয়ার হোসেন, মো. নাসির হোসেন, সূর্য মিয়া সহ আসামিদের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
অন্যদিকে, মো. লিয়াকত আলী সরকার, আবিদ রেজা, নাজির হোসেন, যুবলীগ নেতা মহিবুল হাসান, হাবিবুর রহমান পান্না, নাজমুল হাসান প্রতারণার মাধ্যমে সেলিম হাওলাদার গংদের ভুয়া এনআইডি কার্ড বানিয়ে এবং চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট সহ জাল কাগজপত্র সৃজন করে জমি বিক্রির পাঁয়তারা করলে পুলিশ তাদের হাতেনাতে ধরে গ্রেফতার করে। এই বিষয়ে ধানমন্ডি মডেল থানায় মামলা নং-১০(১০)২০২০ইং দায়ের করা হয়েছে।
সিন্ডিকেট ও বিতর্কিত জমি
এদের কয়েকটি সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা ঝামেলাপূর্ণ জায়গাগুলোর মালিক সেজে বিক্রি করে দেয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যে জায়গা বিক্রির জন্য এনআইডি জাল করা হয়েছে সেটি তুরাগ থানার হরিরামপুর রানা ভোলায় অবস্থিত। জায়গাটি নিয়ে বর্তমানে মামলা চলছে।
এক ব্যক্তির একাধিক এনআইডির বিষয়ে জানতে নির্বাচন কমিশনের একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কেউই কথা বলতে রাজি হননি। গৌবিন্দ বাড়ি মৌজা, ভবানীপুর মৌজা, কাশিমপুর ভূমি অফিসের আওতাধীন।
গাজীপুর জেলা, কাশিমপুর থানা।
কাশিমপুরের কিছু প্রতারক চক্র, জাল, জালিয়াতি করে আসছে। এখানে কবির নামের একজন বেক্তিকে রশিদ হাওলাদারের ছেলে দাবী করেন। এইখানে কিছু প্রতারক চক্র মিলে তাকে দাবী করান যে তিনিই রশিদ হাওলাদারের ছেলে। এই কবিরের নামে, পি পি আই ও বিভিন্ন মামলা চলমান আছে কিন্তু এইখানে আমরা কিছু তথ্য জানতে পারি যে, রশিদ হাওলাদার এর ছেলে ৪জন এবং তারা হচ্ছে ২জন ঢাকায় ও ২জন নিজ গ্রামের বাড়িতে, বরিশাল গৌরনদী। কিন্তু নিজেকে ছেলে দাবী করা কবির এর পুরো নাম হচ্ছে, কবির শেখ,, তার বাড়ি হচ্ছে বরিশালের পিরুজপুর মোটবারিয়া থানা। মূলত নিজেকে ছেলে দাবী করা কবির একটি প্রতারক চক্র এর সাথে মিলে নিজেকে দাবী করিয়া আসিতেছে, মূল চক্রটা হচ্ছে গাজীপুরের কিছু অসাধু লোক।