আবদুল আউয়াল রোকন,বিশেষ প্রতিনিধি:চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলাধীন গুমান মর্দ্দন পেশকারহাট মাদরাসার শিক্ষক ফজলুল করিম হাফিজির ২৫ বছরেও মেলেনি অবৈধভাবে জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত করা চাকরি।
২০০০ ইং সাল থেকে শুরু হয়ে আজও পর্যন্ত চলছে বিভিন্ন দপ্তর সহ কোর্টে দৌড়া দৌড়ি । ভুক্তভোগী ন্যায অধিকার ফিরে পেতে নিজ পকেটের টাকা খরচ করে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে, এভাবে শতাধিকবার
(১১২বার) চলেছে মামলায় হাজিরা এবং তারিখ পিছানোর ঘটনা।
অভিযোগে জানা যায়, চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলাধীন গুমান মর্দ্দন পেশকারহাট মাদরাসায় ২৮/০১/২০০০ ইং তারিখ বন্ধের দিন(শুক্রবার) রাতে অনিয়ম ও অনৈতিক ভাবে উক্ত মাদরাসার শিক্ষক মোঃ ফজলুল করিম হাফেজীর কাছ থেকে বহিরাগত লোকের সহযোগিতায় জোর পূর্বক পদত্যাগ পত্র লেখিয়ে নেয়া হয় । সে কারনে তিনি ১১ ফেব্রুয়ারি ২০০০ সালে হাটহাজারী মডেল থানায় একটা করেন- জিডি নং-৪৫৫।
প্রতিকার চেয়ে বিচারের আশায় যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করে
০৬/১১/২০০০ইং-তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরের তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সুপারিশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ২৬/১২/২০০০ইং-এ রেজিস্ট্রার-
বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা , ০৯/০১/২০০১ইং-এ মহাপরিচালক-মাউশি অধিদপ্তর এবং ১৩/০৩/২০০১ ইং-এ
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কর্তৃক পত্রাদেশ প্রদান করা হয়।
নির্দেশনা বাস্তবায়নে গড়িমসির কারনে পুনরায় ০৩/০৪/২০০১ইংরেজি তারিখে মহাপরিচালক-মাউশি অধিদপ্তর, ঢাকা দ্বারা ১৫দিনের মধ্যে প্রতিবেদনের সুপারিশের দফাওয়ারী জবাব জেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে পেশ করার নির্দেশ প্রদান করা হয়, ব্যর্থতায় উক্ত মাদরাসার যাবতীয় অনুদান স্থগিত রাখার কথাও উল্লেখ করা হয় ।
উক্ত মাদরাসা কমিটিতে ৩জন ভূয়া সদস্য থাকায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর , মহাপরিচালক মাউশি অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের ভিত্তিতে “গভার্নি কমিটি এন্ড ম্যানেজিং কমিটি রেগুলেশন-১৯৭৯” এর ক্ষমতা বলে মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ১৮/০৩/২০০১ ইং তারিখে উক্ত মাদরাসার কমিটি বাতিল করে দেয়।
কিন্তু তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখে কোর্ট ও বোর্ডের নির্দেশ এবং উকিল নোটিশকে পাত্তা না দিয়ে এক রকম প্রভাব খাটিয়ে শিক্ষক নিয়োগ ও পদায়ন প্রক্রিয়াও চালিয়ে নেয়া হয় এ বাতিল কমিটি দ্বারা ।
এইদিকে জেলা প্রশাসক ১৩/৩/২০০১ ইং-এ মহামান্য সাব জজ আদালত আদেশ নং-৮ মূলে তাং ১২/০৭/ ২০০১ রায় দেয়। এবং মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ২৬/০৮/২০০১
ইং-এ আরেকটি আদেশ দেয় ।
হুজুর বলেন মাদরাসা কতৃপক্ষ আবার মিস আপীল করে বিজ্ঞ আদালতে নং-১৩২/২০০২ ইং।
এ বিজ্ঞ আদালত ৩০/১১/২০০২ ইং-এ এক আদেশ জারি ক’রে ৬নং বিবাদী স্বীয় পদে যোগদানের আদেশ চেয়ে আদালতে আবেদন করলে, বিজ্ঞ আদালত শুনানী শেষে তার সহসুপার পদে যোগদান সহ অন্যান্য অধিকার প্রাপ্তিতে বাঁধা প্রদান না করতে, আদেশ নং-২৫ মূলে , ০৫/০৮/২০০৪ ইং তারিখে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে। ১ হতে ৩ নং বাদীগন মামলা শেষ হয় নাই বলে তাঁকে যোগদানে বাঁধা প্রদান করা হয় ।
অপর মামলা নং-৮৩/২০০১ কোর্ট পরিবর্তন হয়ে ২১৭৯/২১ হয় , উক্ত মামলা বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক আদেশ নং-১৬৮ মূলে তাং ০৫/০৬/২০২২ ইং -এ খারিজ করা হয়।
খারিজের ১০/১১ মাস পর উক্ত মামলা পুনরায় উত্তোলনের পর বিজ্ঞ আদালত উভয়ের শুনানী শেষে আদেশ নং-১৮৮ মূলে তাং-২৭/০৮/২০২৪ ইং-এ উক্ত আবেদন না মঞ্জুর / খারিজ ক’রে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখা হয় ।
ভুক্তভোগী মোঃ ফজলুল করিম হাফেজী বলেন, আমি বাইরের লোক বিধায় অনৈতিকভাবে জোর পূর্বক বন্ধের দিন (শুক্রবার) রাতে বহিরাগত লোক এনে পদত্যাগে বাধ্য করেন এবং সংশ্লিষ্ট দপ্তরের ও কোর্টের রায় নিয়ে মাদরাসায় গেলে মামলার অযুহাত দেখিয়ে আমাকে যোগদানে বাধা প্রদান করা হয়।
ন্যায় বিচারের আশায় বিভিন্ন অফিসে দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে আজ সর্বশান্ত হয়ে পরিবার নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি ।
গুমান মর্দ্দন পেশকারহাট মাদরাসার সুপার মোঃ নুরুন আমিন বলেন , উনার পদ খালি নাই । তাছাড়া বাদী পক্ষের মামলার অনুকূলে রায়ের কিছু ডকুমেন্ট চাওয়া হলে তা তিনি আজও পর্যন্ত এ প্রতিবেদককে দেন নাই ।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ সেলিম রেজা বলেন , জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে ৭ জানুয়ারী-২০২৫ ইংরেজি তারিখে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দেয়া এক পত্রাদেশ কেন আমাকে মার্ক করে দেয়া হয়েছে তা আমার বোধগম্য নয় ।
উক্ত মাদরাসার কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম মশিউজ্জামান বলেন, মামলা আছে তাই আমার কিছুই করার নাই । সর্বশেষ জেলা প্রশাসকের কার্য়ালয় থেকে দেয়া ৭/১/২০২৫ ইংরেজি তারিখের পত্রাদেশ টি মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে দেয়া হয়েছে ।