শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:৪৫ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সংবাদ শিরোনাম :
সেনবাগে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত।  ফেনী নদীতে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি, রকেট ল্যান্সারের আগুনে পুড়ল বসতঘর পুলিশ পাহারায় খাগড়াছড়ি ছেড়েছেন জেলার আকতার হোসেন   সুষ্ঠ নির্বাচনের মধ্যেমে যে দল ক্ষমতায় আসবে তারাই দেশ চালাবেন – জয়নুল আবদিন ফারুক চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের কোনো সুযোগই দেখছেন না পন্টিং আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্যে যাচ্ছি: শান্ত ‘শাহরুখ খানের সাক্ষাৎকার নিতে চাই’ সিনেমা হলে আবেগে ভাসলেন শতাধিক রিকশাচালক তসলিমা নাসরিনকে যে সতর্কবার্তা দিলেন মামুনুল হক খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার বিষয়ে যা জানালেন জাহিদ হোসেন

দ্রুত নির্বাচন চাওয়ারা হামলার পেছনে ।

দিগন্তের বার্তা ২৪ ডেস্ক : / ১৮ বার পঠিত
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫, ১২:৩১ অপরাহ্ণ

রাজনীতি ডেস্ক:-সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্রজনতা’র শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’র হামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী বলেছেন, “ভারতীয় সেনাপ্রধানের সাথে তাল মিলিয়ে যারা দ্রুত নির্বাচন চায়, তারা এই হামলার পেছনে রয়েছে। আপনারা লাশের রাজনীতি বন্ধ করুন। বাংলাদেশে আর কোনো লাশের রাজনীতি চলবে না “

আর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, “১৯৭২-এর সংবিধানে দেশের প্রতিটি জাতিকে স্বীকৃতি না দিয়ে সকলকে বাঙালি বলে একসূত্রে গাঁধতে চাওয়া হয়েছিল। এতে বাকি জাতি সত্তার অধিকার হরণ করা হয়েছে। আজকের হামলার ঘটনাও বাঙালি বলে স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। অথচ গত ৫ অগাস্ট এই স্লোগানকে স্থায়ীভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে ছাত্র-জনতা।”

বুধবার সন্ধ্যায় এক প্রতিবাদ মিছিল শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দুই সংগঠনের নেতারাই দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে।

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে ‘আদিবাসী’ শব্দ সংবলিত একটি চিত্রকর্ম স্থান পেয়েছিল। সেখানে একটি গাছের পাঁচটি পাতায় লেখা ছিল মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও আদিবাসী; পাশে লেখা ছিল ‘পাতা ছেঁড়া নিষেধ’।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ‘স্টুডেন্ট ফর সভরেন্টি’ ব্যানারে গত ১২ জানুয়ারি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড- এনসিটিবি ঘেরাও করার পর রাতে ওই বইয়ের অনলাইন সংস্করণ থেকে চিত্রকর্মটি সরিয়ে ফেলা হয়।

এর প্রতিবাদে বুধবার বেলা ১১টায় পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেয় ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্রজনতা’ নামে আদিবাসী শিক্ষার্থীদের একটি সংগঠন। পরে ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’ও একইসময়ে পাঠ্যপুস্তক ভবন ঘেরাও করার ঘোষণা দেয়।

ঘোষণা অনুযায়ী ‘আদিবাসী ছাত্রজনতা’র ব্যানারে শিক্ষার্থীরা বুধবার পাঠ্যপুস্তক ভবনের সামনে উপস্থিত হলে সেখানে আগে থেকে অবস্থান নিয়ে থাকা ‘স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি’র সদস্যরা তাদের ওপর চড়াও হয় এবং বেধড়ক লাঠিপেটা করে। হামলায় আহত নয়জনকে পরে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এর প্রতিবাদ জানিয়ে নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, “আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল সকলের মানবিক মূল্যবোধ ও সামাজিক সমতা নিশ্চিতের দাবিতে। কিন্তু সেটি না করে ৭২ এর সংবিধানে শুধু এটি জাতিগোষ্ঠী বাঙালিকে প্রাধান্য দেওয়ায় আমাদের বোন আজ হাসপাতালে। আমরা সেই বাহাত্তরের সংবিধান বাতিল চাই। আমরা যদি এই মুজিববাদী সংবিধান বাতিল করতে না পারি, তাহলে প্রতিনিয়ত এই রকম রক্ত ঝরবে।”

চিকিৎসারত আহত ও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর লোকজনদের শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে দ্রুত এর বিচার করার দাবি জানান তিনি।

নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “আমরা যেমন বাঙালি, তেমনি চাকমা, মারমা, তনচংগাসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী রয়েছে। সবার কথা বলার অধিকার আছে। সবাই দেশের নাগরিক। কিন্তু আজকের এই ন্যক্কারজনক হামলার আমরা তীব্র নিন্দা জানাই।

“অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। গ্রেপ্তার করে পরের দিন জামিন দিয়ে দিলে হবে না। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।”

নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সারজিস আলম বলেন, “এই ধরনের হামলা আমাদের রাষ্ট্রের ক্ষতকে নির্দেশ করে। যেখানে একই ইস্যু নিয়ে দুটি গ্রুপ পরস্পর বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে, সেখানে যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া দরকার ছিল, আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা তা করেনি।

“আজকের ঘটনাসহ পূর্বের সকল অপরাধের বিচার করতে হবে। এই বিচার শুধু গাল-গল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। এর বিচার দৃশ্যমান হতে হবে৷ আজকের ঘটনায় স্পষ্ট প্রমাণ আছে। হামলাকারীরা ফৌজদারি অপরাধ করেছে, তাদেরকে কেন এখনো গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না?”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন,নিজেদের মধ্যে মতবিরোধ থাকলে সেটি আলোচনার টেবিলে নিরসন সম্ভব ছিল।

“হামলাকারীদের ছবি তো স্পষ্ট। এখন হামলাকারীদের নিরাপদ রাখার জন্য ট্যাগিংয়ের রাজনীতি অব্যহত রয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করে দ্রুত শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি৷ আমাদের বিভাজনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে৷ পাহাড়ের জনগোষ্ঠীর প্রতি আহ্বান, আপনারা কারো ফাঁদে পা দেবেন না৷”

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, “কিছু ভূঁইফোড় সংগঠন গজিয়ে উঠেছে। তারা ছাত্রলীগের কায়দায় লোকজনের উপর হামলা চালাচ্ছে। ছাত্রলীগের কায়দায়-‘তুমি কে? আমি কে? বাঙালি! বাঙালি’ বলে স্লোগান দিচ্ছে।”

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আমরা চাই তাদের গ্রেপ্তার করা হোক।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা বলেন, “জুলাই আন্দোলনের পাঁচ মাসের মাথায় একই দৃশ্যের পুনরাবৃত্তি ঘটছে, তা দুঃখজনক।

জাতিগত শান্তি প্রতিষ্ঠায় হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান তিনি।

অন্যদের মধ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নির্বাহী সদস্য মেহরাব সিফাত, রিফাত রশিদ, লুৎফর রহমান, আবদুল হান্নান মাসুদ এ সময় বক্তব্য দেন।

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরও খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর