রাজনীতি ডেস্ক:-শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি গণবিরোধী সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জিএম কাদের।
রোববার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, “নতুন করে ভ্যাট আরোপ হবে সরকারের নির্দয় সিদ্ধান্ত।”
বিবৃতিতে গণবিরোধী এ সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসতেও পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।
এক বছরের বেশি সময় ধরেই দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতির উল্লম্ফন ঘটেছে; কখনো খাদ্যে, কখনো খাদ্য বহির্ভূত খাতে, কখনো আবার সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছাড়িয়েছে দুই অংকের ঘর।
উচ্চ মূল্যস্ফীতির এ সময়েও ওষুধ, এলপি গ্যাস, মোবাইলে ফোনের সিম কার্ডের মত প্রয়োজনীয় পণ্যসহ শতাধিক পণ্য ও সেবায় আমদানি, উৎপাদন, সরবরাহ পর্যায়ে শুল্ক ও কর বাড়ানো হয়েছে সম্প্রতি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজস্ব আদায় বাড়াতে সরকার শুল্ক-কর বাড়ানোর সহজ পথ বেছে নিয়েছে। আর এই পদক্ষেপে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
অন্তর্বর্তী সরকারের এ সিদ্ধান্তকে ‘গণবিরোধী’ বলে মন্তব্য করেছেন রাজনীতিকদের কেউ কেউ।
বিবৃতিতে জি এম কাদের বলেন, “দেশের মানুষের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো নেই। সাধারণ মানুষ আয় দিয়ে ব্যয় নির্বাহ করতে হিমশিম খাচ্ছে। ঘরে ঘরে বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। অর্থের অভাবে মানুষ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে পারছে না।
“ভালো নেই দেশের ব্যবসায়ীরাও। একদিকে, মূল্যস্ফীতি বেশি, ডলারের উচ্চ মূল্য এবং ব্যাংকের অতিমাত্রায় সুদের বেড়াজালে দেশের মানুষের জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে। এমন বাস্তবতায় শতাধিক পণ্য ও সেবায় ভ্যাট বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত দেশের মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলবে।”
বিবৃতিতে তিনি বলেন, “সরকার ভ্যাট না বাড়িয়ে অতিরিক্ত ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে পারে।”
বর্তমান বাস্তবতায় সাধারণ মানুষের স্বার্থ বিবেচনা সরকারকে সিদ্ধান্ত নেওয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।
২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত করেন রাষ্ট্রপতি। তাই অধ্যাদেশ জারি করে শুল্ক-কর বাড়িয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
বৃহস্পতিবার রাতে ‘মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ এবং ‘দ্য এক্সাইজ অ্যান্ড সল্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’ নামে এ দুটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়।
তার আগে ১ জানুয়ারি অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে মূল্য সংযোজন কর-ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক বাড়াতে এনবিআরের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়।
অধ্যাদেশ জারির পরপরই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে; এতে তা সঙ্গে সঙ্গেই কার্যকর হয়ে গেছে।
সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও এনবিআর দাবি করেছে, এতে ভোক্তার বাড়তি মূল্য গুনতে হবে না।
শুল্ক-কর বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা দাবি করেছিলেন, এ পদক্ষেপে নিত্যপণ্যের বাজারে ‘প্রভাব পড়বে না’।
কর আদায়কারী সংস্থা এনবিআরও একই সুরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে দাবি করেছিল, মূল্যস্ফীতিতে ‘প্রভাব পড়বে না’।