সেনবাগ(নোয়াখালী) প্রতিনিধি: স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার ভয়াবহতা দেখল নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার মানুষ।
গত বেশ কয়েকদিনের অবিরাম বর্ষণে ডুবে গেছে অধিকাংশ বাড়ি ঘর,রাস্তাঘাট, স্কুল, কলেজ মাদ্রাসার মাঠ, অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিসের রুমে ঢুকে পড়েছে পানি।ভেসে গেছে প্রায় সব মাছের ও মুরগির খামার।
সেনবাগ -সোনাইমুড়ি প্রধান সড়ক সহ উপজেলার অধিকাংশ সড়ক পানির নিচে থাকায় ভেঙ্গে পড়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা,পানি নামার পর এ রাস্তা গুলো ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা করা হচ্ছে।
সর্বশান্ত হয়ে গেছে অনেক মাছ ও মুরগির খামারি।
উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। পানিবন্ধি পরিবার গুলোকে সেখানে আশ্রয় নেয়ার আহবান জানানো হয়েছে।
ইতোমধ্যে অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক পানিবন্ধি পরিবার তাদের গৃহপালিত গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
একাধিক বয়স্ক ব্যক্তিদের সাথে আলাপ করে জানা যায় নোয়াখালী জেলার মধ্যে সেনবাগ অনেকটা উচু,তাদের জীবনে এরকম বন্যা আর দেখেন নি!
অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর নির্মাণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা,নোয়াখালী -ফেনী মহাসড়কের পাশের খালের অধিকাংশ জায়গায় ব্রীজ করতে গিয়ে খালে দেয়া বাধ গুলো ঠিক ভাবে অপসারণ না করা,খাল দখল করে অবৈধ ভাবে দোকান,ঘর নির্মাণ সহ খাল গুলোতে পানির প্রবাহ ঠিক না রাখার কারনেই এমন ভয়াবহ বন্যার কারন বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেন।
এদিকে প্রায় সবগুলো প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা দেয়ার পর সেখানে প্রচুর পানি বন্দী মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।অনেক কেন্দ্রে আর আশ্রয় নেয়ার জায়গা নেই।
অনেকেই বলছেন সেনবাগের মানুষ কখনো আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে দেখিনি কিন্তু এখন আশ্রয় নেয়ার জায়গা ও পাচ্ছেন না।
এ অবস্থায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার জিসান বিন মাজেদের নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন পরিস্থিতি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছেন,উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারদের নেতৃত্বে প্রতিটি ইউনিয়নে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খিচুড়ি পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
এছাড়া বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং ব্যক্তি উদ্যোগে পানিবন্দী বিভিন্ন বাড়িতে শুকনো খাবার ও খিচুড়ি পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
ভারত থেকে আসা পানি ফেনী হয়ে সেনবাগের দিকে প্রবল ভাবে আসা এবং অবিরাম বর্ষণ অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি চরম অবনতি হচ্ছে।