নিজস্ব প্রতিবেদক : দৈনিক মজুরিতে জীবিকা নির্বাহ করা ভেট্টো এখন বিত্তশালী। কর্মজীবনের প্রথমেই বঙ্গোপসাগর থেকে চিংড়ি পোনা সংগ্রহ করে দৈনিক ৫/৭শ টাকা আয় করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এই পেশা থেকে অব্যাহতি নিয়ে হোটেল মোটেল জোন এলাকায় ডায়নামিক নামক একটি অ্যাপার্টমেন্টে স্থানীয় যুবক হবার সুবাদে তাদের ঝড় ঝামেলা সমাধানকারি হিসেবে বাহুবলির দায়িত্ব লালন করতেন। পরবর্তীতে লাইনম্যান হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন সিএনজি সমিতিতে।
চাকরির সুবাদে বুঝে নেন কোনখাতে কিভাবে টাকা আসে।সমিতির কর্মচারী হিসেবে কিছুদিন পার হতে না হতেই পুরোটাই নিয়ন্ত্রণে নেন তিনি। শুরু হয় তার কর্মযজ্ঞের অগ্রগতি। সময়ের বিবর্তনে অভাবের তাড়নায় আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে।
পরিবহনখাত এবং ফুটপাতের হকার থেকে চাঁদাবাজির টাকায় প্রতিনিয়ত এগোতে থাকেন তিনি। আলোচিত এই ব্যক্তিটি হলেন কক্সবাজার পৌরসভা ১২ নং ওয়ার্ড মধ্যম কলাতলী এলাকার গোলাম কবিরের ছেলে আবদু সালাম ভেট্টো।
রয়েছে তার অর্ধশতাধিক সদস্যের সিন্ডিকেট। একই সাথে দীর্ঘ বছর দায়িত্বে রয়েছেন ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হিসেবে। নিজস্ব সিন্ডিকেট এবং ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে প্রতিনিয়ত দীর্ঘ হতে থাকে তার চাঁদাবাজির কর্মজীবন। তার নানা অপকর্মের পাশাপাশি বিশাল একটি অর্থের উৎস হলো সিএনজি ব্যাটারি চালিত টমটম এবং ফুটপাতে নানা ব্যবসার অস্থায়ী হকার।
ডলফিন মোড় কলাতুলি হতে মেরিন ড্রাইভ হয়ে চলাচল করতে প্রতিটি সিএনজিকে ২শ টাকা লাইন খরছ হিসেবে ভেট্টো বাহিনীকে দিতে হয়। ব্যাটারী চালিত টমটম গাড়িতেও দিতে তাদের নির্ধারিত ইচ্ছে মত চাঁদা। অপরদিকে ডলফিন মোট সংলগ্ন ফুটপাতের আশেপাশে বসা অস্থায়ী ঝুপড়ি এবং হকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও মাসোহারা আদায় করেন এই ভেট্টো গ্রুপ। চাঁদাবাজির প্রতিটি খাতে রয়েছে টাকা আদায়ের জন্য নির্ধারিত সদস্য।
চাঁদাবিহীন সিএনজি-টমটম কোনভাবে মেরিন ড্রাইভ সড়ক হয়ে উখিয়া- টেকনাফ যাওয়া সম্ভব নয়।পরিবহন এবং হকার সব খাতেই কেউ যদি চাঁদা দিতেয অপারগতা প্রকাশ করে তাহলে তার উপর নেমে আসে অত্যাচার-নির্যাতন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডজনাধিক ভুক্তভোগী এমনটাই জানান। তারা বলেন,জীবন জীবিকার তাগিদে হকার ব্যবসা করতে হলে অবশ্যই চাঁদা দিতে হবে। নতুবা পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টসাধ্য দিন অতিবাহিত করা ছাড়া উপায় নাই। জানাযায়,একসময়ের হতদরিদ্র ভেট্টোর মেরিন ড্রাইভ সড়কে রয়েছে লিভ ইন রিসোর্ট নামক একটি আবাসিক হোটেল ব্যবসা। ডায়নামিক নামক একটি এপার্টমেন্টে রয়েছে একাধিক ফ্ল্যাট। এছাড়াও নামে বেনাম অদৃশ্য অনেক সম্পদ রয়েছে এবং যার সবকিছুই নানান চাঁদাবাজির মাধ্যমেই গড়ে ওঠা বলে জানা স্থানীয় জনগণ।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে,আমি চিংড়ি পোনার ব্যবসা করে জীবীকা নির্বাহ করি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে তার বিরুদ্ধে আনিতো সব অভিযোগ মিথ্যা বলে জানান আবদু সালাম ভেট্টো।
সড়কে সিএনজি অটো রিক্সার চাঁদা নেয়ার বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষের কোন ইজারা আছে কিনা জানতে চেয়ে পৌর মেয়র মাহবুবুর রহমানের ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করা হলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি এবং ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।
ট্রাফিক বিভাগে দায়িত্বে থাকা কক্সবাজার জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মোঃ জসীম উদ্দীন জানান, সড়কের পরিবহনকাতে চাঁদাবাজি বিষয়টি অবগত নয়। এবং তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে ।