অনলাইন ডেস্কঃ আজ মরহুম ভাষা সৈনিক বদিউল আলম চৌধুরী’র ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ সমাজদরদী মানুষটি ২০০৭ সালের ১০ অক্টোবর ২৭ রমজান পৃথিবীর মায়া ছেড়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে ইন্তেকাল করেন।
একনজরে ভাষাসৈনিক মরহুম বদিউল আলম চৌধুরী’র ইতিকথাঃঅংশগ্রহণ সংক্রান্ত সংবাদ পরিবেশন করে। (দৈনিক আজাদী ১৫ ফেব্রুয়ারী, ১৯৬৯) ১৯৬৯ সালের গণ অভুত্থানে ডাঃ সামসুজ্জোহা নিহত হওয়ার পর, শেখ মুজিবর রহমান সহ সকল রাজবন্দী র মুক্তি দাবী করেন খেলাফতে রব্বানী পার্টির সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম চৌধুরী। (দৈনিক আজাদী ২০ শে১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ প্রদান করেন। তার পরদিন চট্টগ্রাম থেকে মরহুম বদিউল আলম চৌধুরী “স্বাধীন নয়াবাংলা” শ্লোগান নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন।
তিনি নগরীর আন্দরকিল্লা পুলিশ বিটে বক্তব্য রাখেন এবং স্বাধীনতার পক্ষে মিছিলে নেতৃত্ব দান করেন। এ সম্পর্কে স্মৃতি চারন করতে গিয়ে কবি ও অনুবাদক জহুর-উর-শহীদ লেখেন “তিনি আন্দরকিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সম্মুখে পুলিশ বিটের উপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বক্তব্য রাখেন এবং নেতৃত্ব দেন “। ফেব্রয়ারী, ১৯৬৯)।১৯৭৬ সালে ডেমোক্রেটিক লীগ গঠিত হলে তিনি ঐ দলের সিনিয়র সহ- সম্পাদক মনোনিত হন। চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন।
১৯৭৮ সালে সম্মিলিত বিরোধী দলের গণফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করেন।শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তাঁর দলে যোগদানে অনুরোধ করেন। সামরিক শাসক হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদের তিনি মন্ত্রীত্বের টোপ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন ঘৃণা ভরে কলামিস্ট সাখাওয়াত হোসেন মজনু এ সম্পর্কে বলেন” আমি দৈনিক আজাদী র সম্পাদক জনাব খালেদ সাহেব থেকে শুনেছি,খালেদ সাহেব ও মরহুম বদিউল আলম চৌধুরী সাহেবকে ডিবি অফিসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং তাদের কে জাতীয় পার্টিতে যোগ দান করলে মন্ত্রীত্বের প্রস্তাব দেওয়া হয়, আমরা দু’জন ই তা ঘৃণা ভরে ফিরিয়ে দিয়েছি”।
মরহুম বদিউল আলম চৌধুরী কে কোন দিন লোভ লালসা গ্রাস করে নি। মরহুম বদিউল আলম চৌধুরী জমিয়াতুল ফালাহ্ র ৫ জন প্রতিষ্ঠাতার একজন, তিনি ২ বার বোর্ড অব গভনর্সের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি মুসলিম এডুকেশন সোসাইটি’র সাথে ১৯৬৪ সাল থেকে জড়িত। যে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে চট্টগ্রামে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়েছিলো। তিনি মুসলিম এডুকেশন সোসাইটি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে শাহী জামে মসজিদ ও মুসলিম এডুকেশন সোসাইটি’র সাথে সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তি করেন।
তিনি তমুদ্দুন মজলিশ চট্টগ্রাম াখার সহ- সভাপতি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন আন্দোলন পরিষদের ১ম সহ সাধারন সম্পাদক, কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, সর্বশেষ সহ- সভাপতি, নুরুল হক চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি, সেন্ট প্ল্যাসিডস হাই স্কুল,এম.ই.এস স্কুল, চট্টগ্রাম চাঁদ দেখা কমিটি, চট্টগ্রাম সন্ত্রাস প্রতিরোধ কমিটির যুগ্ম সম্পাদক , হয়রত মঈনুদ্দিন শাহ্ (রাঃ) মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সহ সভাপতি,সুলতান বায়েজিদ বোস্তামী মসজিদ কমিটির কার্যকরী পরিষতের সদস্য, প্রিন্সিপ্যাল আবুল কাসেম স্মৃতি পরিষদের সহ- সহাপতি ছিলেন। এ সমাজদরদী মানুষটি ২০০৭ সালের ১০ অক্টোবর ২৭ রমজান ইন্তেকাল করেন।
গুণিদের কদর না করলে সে সমাজ এগিয়ে যেতে পারে না। মরহুম ভাষা সৈনিক বদিউল আলম চৌধুরী র নামে একটি রাস্তার নামকরন প্রস্তাব হয়েছিলো ইতিমধ্যে যা এখনো বাস্তবাযন হয় নি। যাদের অবদানে রাষ্ট্রভাষা বাংলা পেলাম, পেলাম স্বাধীনতা তাঁ স্বীকৃতি স্বরূপ একুশে পদকে ভূষিত করার জন্য দাবী রইল।