সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১:০০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
সংবাদ শিরোনাম :
নানিয়ারচরে বন্যা কবলিত অসহায়দের মাঝে সেনাবাহিনীর ত্রাণ বিতরণ নানিয়ারচরে যৌথ বাহিনীর অভিযানে ইউপিডিএফ কর্মী আটক নানিয়ারচরে স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি ঘোষণা সেনবাগের রক্তদানকারী সংগঠন “ব্লাড এন্ড হার্ট”এর প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পাহাড়ে শান্তি, সম্প্রীতি ও উন্নয়ন নিশ্চিত হয়েছে-কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি হাতিয়ায় বিদ্যুতায়ন প্রকল্পের নতুন ভবন উদ্বোধন বন্যা কবলিত অসহায় হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করলেন- সেনাবাহিনী রামগড়ে ভ্রাম্যমান আদালতে ৭ ব্যবসায়ীকে জরিমানা মাটিরাঙ্গায় অবৈধ পথে আনা ভারতীয় ঔষধ ও কসমেটিকস উদ্ধার পানছড়িতে পুলিশের অভিযানে চোরাকারবারি আটক

মার্শাল আর্ট ভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণে আবারও ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম

দিগন্তের বার্তা ২৪ ডেস্ক : / ১৩৮ বার পঠিত
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১২:৪৩ পূর্বাহ্ণ

কে এম রাজীব : বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে নতুন প্রজন্মের কাছে মার্শাল আর্টকে পরিচিতি ও প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য দীর্ঘ বিরতির পর মার্শাল আর্ট ভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণের আবারও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতা বাংলাদেশে মার্শাল আর্টের জনক ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম। প্রাথমিক ভাবে সিনেমাটির নির্ধারণ করা হয়েছে ” ডিজিটাল প্রেম “। সিনেমার গল্প তৈরির কাজ অব্যাহত রয়েছে। এ সিনেমায় দুজন নতুন নায়ক নায়িকা অভিনয় করার কথা রয়েছে। সিনেমা হল বন্ধ হওয়ার কারণে অনেক বছর চলচ্চিত্র নির্মাণ করা বন্ধ করে দিয়েছিেন। বর্তমানে নতুন আঙ্গিকে কিছু সিনেমা হল ( সিনেপ্লেক্স) হয়েছে। তা দেখে আবারও সিনেমা তৈরির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন তিনি।

তবে খুব শিগগির সিনেমাটির বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে সম্প্রতি চট্টগ্রামে এক সাক্ষাতকারে বলেন ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম। আবারও মার্শাল আর্ট ভিত্তিক নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, মার্শাল আর্ট হচ্ছে খালি হাতে প্রতিপক্ষকে পরাজিত করে নিজেকে রক্ষা করার কৌশল যা একমাত্র অনুশীলনের মাধ্যমে সম্ভব।

এ কৌশল প্রাচীনকাল থেকে শুরু হয়। এর অনুশীলন প্রথমে বিশ্বের কয়েকটি দেশে শুরু হলেও পরবর্তীতে বিশ্বের প্রায় দেশে এর প্রচলন ও অনুশীলন শুরু হয়। এর পর বিশ্বের দেশ গুলোতে নির্মাণ করা হয় মার্শাল আর্ট নিয়ে চলচ্চিত্র। তারই ধারাবাহিকতায় মিয়ানমার থেকে মার্শাল আর্টে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হয়ে ৭০ এর দশকে নিজ মাতৃভূমিতেও মার্শাল আর্টের প্রচলন ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠিত করি মার্শাল আর্ট স্কুল।

যেহেতু কোনো কিছু প্রচার প্রসারের কোনো একটি মাধ্যম প্রয়োজন হয়, সেহেতু আমি মনে করি চলচ্চিত্র প্রচারের আরেকটা মাধ্যম। তাই আমি চলচ্চিত্রের একজন শিল্পী হিসেবে বলবো, মার্শাল আর্টকে আমি আবারও চলচ্চিত্রের মাধ্যমে সুদূর এগিয়ে নিয়ে যাবো। সে চিন্তা চেতনায় আমার নতুন চলচ্চিত্র ” ডিজিটাল প্রেম ” নির্মাণের উদ্যােগ।

ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলমের পৈত্রিক বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার রাউজানে হলেও কক্সবাজারের উখিয়ায় নানার বাড়ি হওয়ায় ১৯৫৯ সালের ৫ সেপ্টেম্বর তিনি উখিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। ছোট বেলা থেকে মারপিটের খেলা ছিলো তাঁর নিত্য সঙ্গী। একসময় বাবাকে হারিয়ে শুরু হয় তাঁর জীবন যুদ্ধ।

পরিবার নিয়ে ছিলো তাঁর অনেক স্বপ্ন। স্বপ্ন পূরণ করার লক্ষ্য একসময় চলে যান মিয়ানমারে। সেখানে কর্ম জীবনের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ নেন মার্শাল আর্টের। এর পর মার্শাল আর্টে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত হয়ে ফিরেন নিজ জন্মভূমি বাংলাদেশে। ৭০ এর দশকে বাংলাদেশে মার্শাল আর্টকে পরিচিতি লাভ করার লক্ষ্য অত্যন্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে কক্সবাজারে প্রতিষ্ঠিত করেন ক্যারাতে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মার্শাল আর্ট স্কুল। এর পর একসময় তাঁর সাথে পরিচয় হয় বাংলােশ চলচ্চিত্রের ড্যাসিং হিরো, পরিচালক, প্রযোজক ও অভিনেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুদ পারভেজ সোহেল রানার সাথে।

পরিচয়ের সূত্রে সোহেল রানা তাঁকে চলচ্চিত্রে কাজ করার আমন্ত্রণ জানান।পরে তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করে ঢাকায় চলে যান। সেখানে সোহেল রানা নিজেই মার্শাল আর্ট শিখেন ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলমের কাছে। এরপর ধীরে ধীরে মার্শাল আর্টকে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করান। প্রথমে ৭০ এর দশকে মাসুদ পারভেজ এর ” যাদু নগর” চলচ্চিত্রের মাধ্যমে আর্বিভাব ঘটে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলমের। পরবর্তীতে মার্শাল আর্ট শিল্পটি চলচ্চিত্রে জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং একের পর এক মার্শাল আর্টের ছবি নির্মাণ হতে থাকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রে।

জাহাঙ্গীর আলম চলচ্চিত্রে প্রবেশের পর মার্শাল আর্টের প্রতি অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নেন লড়াকু নায়ক মাসুদ পারভেজ রুবেল, খালিদ মাহমুদ, ড্যানি সিডাক, ইলিয়াছ কাঞ্চন, মিশা সওদাগর, অমিত হাসান সহ আরও অনেকে। জাহাঙ্গীর আলম সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও মার্শাল আর্টকে চলচ্চিত্রের মাধ্যমে জনপ্রিয় করতে ৮০’র দশকে নায়ক সোহেল রানাকে নিয়ে মার্শাল আর্টের পরিপূর্ণ রুপ দিয়ে নির্মিত করেন তাঁর প্রথম প্রযোজিত সিনেমা ‘মার্শাল হিরো’। এরপর চলচ্চিত্রে জোয়ার বইতে থাকে মার্শাল আর্ট সিনেমার এবং জনপ্রিয়তা অর্জন করেন ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম।

ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলমের উল্লেখযোগ্য ছবি হলো, শরীফ বদমাশ, সিআইডি, লড়াকু, হাইজ্যাক, বিদ্রোহী, মার্শাল হিরো, লিনজা, মাস্টার সামুরাই, ওস্তাদের ওস্তাদ, কুংফু নায়ক, প্রেমিক রংবাজ, মরণ লড়াই, সোহেল রানা, ক্যারাটি মাস্টার, কুংফু কন্যা, ওস্তাদ সাগরেদ, মৃত্যুঘণ্টা, পেশাদার খুনি, সুন্দরী মিস বাংলাদেশ, সাহসী সন্তান, বিদ্রোহী মাস্তান ও লাল চোখ। জাহাঙ্গীর আলমের অভিনয়ের থেকে মার্শাল আর্টকে প্রাধান্য দিতেন বেশি। তাঁর প্রথমদিকের ছবি যেমন ‘শরীফ বদমাশ’-এ ভালো অভিনয় ছিল। তবে তার সেরা ছবি ছিল ‘ মার্শাল হিরো’ ‘মাস্টার সামুরাই ও ‘ ক্যারাটি মাস্টার’।

তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশন সহ বিভিন্ন টিভিতে মার্শাল আর্টের অনুষ্ঠানও করেছেন। ২০০০ সালের পরবর্তী সময়ে কিছু কিছু বাংলা সিনেমায় যখন অশ্লীলতা ভর করে বসে তখন তিনি নিজেকে খানিকটা আড়াল করে নেন চলচ্চিত্র থেকে। তাঁর বিশ্বাস মার্শাল আর্টকে জনপ্রিয় করার একমাত্র সহজ মাধ্যম হচ্ছে চলচ্চিত্র।

তাই দীর্ঘ বিরতির পর ‘ ডিজিটাল প্রেম’ নামের নতুন একটি সিনেমা নিয়ে আবারও চলচ্চিত্রে পথচলা শুরু করতে যাচ্ছেন। বর্তমানে কক্সবাজারে রিসোর্ট ব্যবসা আর ঢাকাতে নতুন চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাংলাদেশের মার্শাল আর্টের জনক ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম।

Facebook Comments Box


এ জাতীয় আরও খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর