আরিফুল ইসলাম সিকদার:আজ ২৩শে মে রোজ মঙ্গলবার রাঙামাটি পার্বত্যজেলার ভুষনছড়া ইউপি চেয়ারম্যান ও বরকল উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো মামুনর রশিদ মামুনকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০/(সংশোধিত ২০০৩)এর ৯(১) ধারায় হওয়া মামলা হতে নির্দোষ ঘোষনা দিয়ে বেখসুর খালাশ দিয়েছেন রাঙামাটি নারী ও শিশু আদালত।
উল্লেখ্য বিগত ২৪/০৬/২০২০ইং তারিখে বরকল থানায় জৈনেক মোঃ নাসির হাওলাদার নামক একজন ব্যক্তি তার মেয়ে নাসরিনকে জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগ এনে মামুন চেয়ারম্যানকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে আদালত কর্তৃক একাধিকবার উক্ত বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত করার সাপেক্ষে ভিকটিম নাসরিন ও তার নবজাতক সন্তান এবং চেয়ারম্যান মামুনের ডিএনএ পরীক্ষার করানো হয় এবং উক্ত ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মামুন চেয়ারম্যান নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। উক্ত মামলাটি প্রথমে বরকল থানার এসআই মোঃ আজগর হোসেন কতৃক তদন্ত করা হয়।তার কতৃক প্রেরিত তদন্ত রিপোর্টে ঘটনার সত্যতা প্রমাণ পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে নাসির হাওলাদার উক্ত পুলিশ তদন্তে নারাজি দাখিল করলে এএসপি মোহাম্মদ আউয়াল চৌধুরীকে আদালত পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন। উক্ত তদন্তেও মামুন নির্দোষ প্রমাণ হয়।তবে রিপোর্ট আদালতে উপস্থাপন করা হলে নাসির হলাদার পুনরায় মামলা নারাজি দেয়। এবার আদালত পিবিআই চট্টগ্রামকে মামলাটি হস্তান্তর করেন। পিবিআই চট্টগ্রামের পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আবু হানিফ কতৃক মামলাটি পুনরায় তদন্ত ও ডিএনএ করানো হয়। সেখানেও তদন্তেও মামুন নির্দোষ প্রমাণীত হয়েছেন। এরপরেও পুনরায় নাসির হাওলাদার আদালতে নারাজি দাখিল করলে আদালত একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে পুনরায় ডিএনএ টেস্ট ও তদন্তের নির্দেশ দেয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে পুনরায় মামুন চেয়ারম্যানসহ উক্ত ভিকটিম নাসরিন ও তাঁর সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয় এবং রাঙ্গামাটির দায়িত্বরত সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক স্বপন কুমার নাথ কতৃক আরো একটি তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়। সর্বশেষ দেয়া সেই রিপোর্টেও মামুন চেয়ারম্যান নির্দোষ প্রমাণীত হয়েছেন।এছাড়া ভিকটিমের সাথে মামুন চেয়ারম্যানের ফোনালাপ সংক্রান্ত তথ্য মোবাইল ফোনের সিসিডিআর পর্যালোচনা করে কোন সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি তদন্তকারী কর্মকর্তাগন।
পুলিশ কর্তৃক আদালতে দাখিলকৃত তদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচনা করে আরো জানা যায়, মামুন চেয়ারম্যানকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার করার উদ্দেশ্যে তাকে মামলা আসামি করার পেছনে অনেক গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। এর নেপথ্যে কারণ খুঁজতে গিয়ে জানা যায় বরকল উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় পদ পাওয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় দুটি গ্রুপ সক্রিয় হয়ে ওঠে। যার একটি গ্রুপ বাঁদিকে ম্যানেজ করে চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদের বিরুদ্ধে মামলাটি করার পেছনে ভূমিকা রাখে। তদন্ত রিপোর্টের প্রাপ্ত তালিকা হতে জানা যায় আলমগীর হোসেন পিতা হারুনুর রশিদ, সাইফুল ইসলাম মনির পিতা আব্দুর রহমান, মোহাম্মদ শাহিন আলম পিতা মৃত মনির উদ্দিন, সায়রা বেগম স্বামী গোলাম নবী, এমাদুল হক পিতা খলিল, জাফর ইকবাল পিতা আবুল কালাম, মোতালেব হোসেন পিতা আব্দুল হাকিম ব্যক্তিদ্বয় বাঁদিকে প্ররোচনা দিয়ে উক্ত মামলাটি করিয়েছেন।
যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত কর্তৃক আজ দুপুর বারোটা নাগাদ উক্ত মামলার রায়ে আসামি মামুনকে নির্দোষ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন রাঙ্গামাটি নারী শিশু আদালত। এসময় আদালত কর্তৃক উক্ত মামলার বাদী ও ভিকটিমের বিরুদ্ধে ১৭ ধারায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে আসামী পক্ষের আইনজীবী মোক্তার হোসেন ও শফিউল আলম মিয়ার সাথে কথা বললে তারা জানান,এটি একটি অত্র আদালতের জন্য একটি যুগান্তকারী রায়।এই রায়ের ফলে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের অপব্যবহার কমে যাবে।মামুনকে বেখসুর খালাস দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত এবং এই মিথ্যা মামলার বাদী ও ভিকটিমের বিরুদ্ধে ১৭ ধারায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ প্রদান করেছেন রাঙ্গামাটির নারী-শিশু ট্রাইব্যুনাল।
ইউপি চেয়ারম্যান মো মামুনর রশিদ মামুন জানান,মহান আল্লাহর রহমতে সত্যের জয় হয়েছে।বিজ্ঞ আদালত আমাকে নির্দোষ প্রমান করে রায় দিয়েছেন।আমাকে উক্ত মামলায় যারা সহযোগীতা করেছেন সকলের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।