নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চাপাতি দিয়ে স্ত্রীকে হত্যার চেষ্টা এবং নিজেও আত্নহত্যার চেষ্টা করলেও বিভিন্ন কৌশলে সুজন দাস (৪২) নামের একজনকে আটক করেছে সিএমপি’র ডবলমুরিং থানা পুলিশ।
শনিবার (৭ আগস্ট) রাতে নগরীর ডবলমুরিং থানা এলাকা পূর্ব গোসাইলডাঙ্গা প্রগতি শিপিং লাইন্স কার্যালয়ের পেছনে মিনু ম্যানশন নামের এক ভবন থেকে তাকে আটক করা হয়। এতে পুলিশের তৎপরতায় হত্যাকাণ্ড থেকে রক্ষা পেয়েছে এক পরিবার এবং রুখে দিয়েছে একটি আত্মহত্যার প্রচেষ্টা।
আটক সুজন দাশ হাটহাজারী থানাধীন পূর্ব মেখল আলীপুর গ্রামের সাধন মেম্বার বাড়ির মৃত সাধন দাশের ছেলে বলে জানা যায়। সূত্রে জানা যায়, আটক সুজন দাশের সাথে ১৩ বছর পূর্বে বিয়ে হয় সুতৃষ্ণা দাশের সাথে। তাদের ঘরে রয়েছে দুই সন্তান। তারা নগরীর কোতোয়ালি থানাধীন আসকার দীঘির পাড় এলাকায় বসবাস করেন। এর মধ্যে সুজনের সাথে অন্য এক নারীর সাথে পরকিয়া সম্পর্ক হলে তা সুজনের স্ত্রীর কাছে ধরা পড়ে। বিষয়টি নিয়ে দুইজনের মধ্যে প্রায়ই বাগবিতণ্ডা হতো। সর্বশেষ তিনদিন আগে এ বিষয়ে তুমুল ঝগড়া হলে পূর্ব গোসাইলডাঙ্গা এলাকায় মিনু ম্যানশনে বাবার বাসায় চলে যান সুতৃষ্ণা।
পরবর্তীতে সুজন স্ত্রীকে তার বাবার বাসা থেকে নিজ বাসায় ফিরে আসতে বারবার বলার পরেও সুতৃষ্ণা বাবার বাসা থেকে ফিরে না আসায়, এতে ক্ষিপ্ত হয়েই সুতৃষ্ণা ও তার বাবা-মাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে সুজন। পরিকল্পনা অনুযায়ী সুজন নতুন দুইটি চাপাতি কেনে। শনিবার রাতে চাপাতি নিয়ে মিনু ম্যানশনের ৫ম তলায় ওঠার সময় তাকে দেখে ফেলেন সুতৃষ্ণা।এসময় তাড়াতাড়ি করে ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন তিনি। সুজন প্রথমে দরজা ধাক্কা দেয়। কিন্তু ভেতর থেকে দরজা না খোলায় এলোপাতাড়ি দরজায় কোপাতে থাকে।
এতে দরজা কিছুটা নড়বড়ে হলে ভেতরে আলনা, টেবিল, সোফা দিয়ে দরজা আটকে রাখেন সুতৃষ্ণা ও তার পরিবার। এসময় ঘরের ভেতর থেকে থানায় ফোন করলে, রাত সোয়া ১১টায় পুলিশ যায় ঘটনাস্থলে। কিন্তু পুলিশকে দেখে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সুজন। এসময় চাপাতি নিয়ে পুলিশের দিকেও তেড়ে আসে সুজন। এবিষয়ে ডবলমুরিং থানার ওসি জানান, একপর্যায়ে নিজের গলায় চাপাতি ধরে সুজন। পুলিশ চলে না গেলে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার হুমকিও দেয়।
অবশেষে এক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় বিভিন্ন কৌশলে সুজনকে নিবৃত্ত করে আটক করতে সক্ষম হয় এবং ওই পরিবারকে উদ্ধার করে পুলিশ। এসময় তার কাছ থেকে নতুন কেনা দুটি চাপাতিও উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সুজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার চেষ্টা, হত্যাপ্রচেষ্টা ও হুমকি প্রদর্শনের অপরাধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।