দিগন্তেরবার্তা২৪,ডেস্কঃ যশোরের মেয়ে “মৌসুমী আক্তার কেয়া”।যিনি একজন সফল উদ্যোক্তা, সফল ব্যবসায়ী। তিনি ২০২০ সাল থেকে চালিয়ে যান জীবন সংগ্রামের একটি অংশ অনলাইন ব্যবসা।তবে থেমে থাকেননি তিনি। দুর্গম পথ এবং ব্যার্থতার গ্লানি উপেক্ষা করে আজ সাফল্যর দ্বারপ্রান্তে ” মৌসুমী আক্তার কেয়া “।হাটি হাটি পা পা করে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে সাথে নিয়ে তিনি হয়ে উঠেন যশোরের সফল নারী উদ্যোক্তা।
”উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প নিয়ে টেকজুমের এবারের আয়োজন।যশোরের মেয়ে ” মৌসুমী আক্তার কেয়া ” এর উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা নিয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন দিগন্তের বার্তা ২৪ এর স্টাফ রিপোর্টার। পাঠকদের উদ্দেশ্যে সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো-
আপনার সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?
আমি যশোরের মেয়ে মৌসুমী আক্তার কেয়া, যশোরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা, পড়াশোনা শেষ করে যশোরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছি আর প্রতিদিন নিজেকে প্রমাণ করছি নিজের কাজ দিয়ে।আমার এই পথচলায় আমার হাজবেন্ড এবং আমার আম্মু অনেক বড় ভূমিকা রেখে চলেছে।
উদ্দ্যেক্তার আগ্রহ কীভাবে তৈরী হলো?
আমি ছোট থেকেই ক্রিয়েটিভ কাজ করতে পছন্দ করতাম। রং,তুলি, ক্যানভাস আমাকে ভীষণ টানতো।নিজের ড্রেস নিজেই ডিজাইন করে পড়তাম। আমি সবসময় স্বাধীনভাবে কাজ করতে চেয়েছি,অন্যরকম কিছু করতে চাওয়ার তীব্র ইচ্ছা থেকেই আজ এই উদ্দ্যেগ।
আপনি অনলাইন বিজনেসে কাকে আইডল হিসাবে দেখতেন?
প্রতিটা সফল উদ্দ্যেক্তার জীবনের গল্প থেকে আমি প্রতিনিয়ত শিক্ষাগ্রহণ করি আর উই গ্রুপ থেকে পরিচিত জামদানী রানী কাকলি তালুকদার আপুকে আমি আমার আইডল মনে করি কারণ আপু তার বুদ্ধি,লেখার শক্তি আর পরিশ্রম দিয়ে জামদানীকে যেভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
কতটুকু সফলতা লাভ করতে পেরেছেন বলে মনে করেন?
আমি নিজেকে এখনো সফল মনে করিনা তবে আমি ব্লকের কাজকে আবার নতুনরুপে,নতুন ডিজাইন দিয়ে মানুষের সামনে তুলে ধরতে পেরেছি।
আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
নিজের কাজে নিজেকে আরো দক্ষ করে তুলতে চাই।দেশীয় বিভিন্ন পণ্যের প্রচারের মাধ্যমে, দেশীয় সম্পদ দেশীয় পণ্যেকে দেশ ছাড়িয়ে দেশের বাইরের মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে চাই আর সেই লক্ষ্যেই কাজ করার জন্য নিজেকে তৈরি করছি।
আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা কি?
আমি যশোর মাইকেল মধুসূদন কলেজ(এম,এম,কলেজ) থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞানে স্নাতক শেষ করেছি।
আপনার চ্যালেন্জগুলো কীভাবে মোকাবেলা করেছেন?
মানষিকশক্তি দিয়ে মোকাবেলা করেছি সবটা।নতুন উদ্দ্যেক্তাদের উদ্দ্যেগে প্রথম বাঁধা থাকে মূলধন আর তারপর ভাল আইডিয়ার অভাব।আমার কাজের খুব সুন্দর সুন্দর আইডিয়া থাকলেও মূলধনছিল না প্রথমে।আবার এদিকে ব্লকের কাজ করার কারিগর খুঁজে পাইনি যশোরে, কীভাবে কাকে দিয়ে ডিজাইনগুলো দিয়ে কাজ করাবো তা নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ি, অনেক মানষিকচাপের মধ্যে দিয়ে দিন পার করেছি।তবে আমার পরিবার,আমার আত্মীয়স্বজন সবার সাপোর্টে এই মানষিকচাপ থেকে বের হয়ে অল্প মূলধনেই কাজ করে গেছি কখনো হাল ছাড়িনি তাই টিকে আছি এখনো পর্যন্ত, পথচলার সাহস পাই আমার পাশে থাকা মানুষগুলোর জন্য।
আপনার নতুন প্রোডাক্টগুলো কি কি?
আমি ব্লকের থ্রিপিস নিয়ে কাজ করলেও এইবার যশোরের বিখ্যাত হাতের কাজ নিয়ে আগাবো,এছাড়া টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি,থ্রিপিস,হ্যান্ডপেইন্ট এবং ব্লকের শাড়ি,পাঞ্জাবি সহ জামদানী নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে খুব তাড়াতাড়ি।
বর্তমানে কভিড১৯ এ ই-কমার্স?
কোভিড ১৯ যদিও কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা কিন্তু তারপরও সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চেষ্টা করছি যাতে ব্যবসাটাকে আরো দ্রুত সম্প্রসারণ করা যায় কিনা এবং যেহেতু উদ্যোক্তার একটা বড় গুন হচ্ছে যেকোনো পরিস্থিতিতে কে কাজে লাগানো ঠিক আমিও সেটাই করছি যেহেতু এখন মহামারির জন্য সবাই বের হচ্ছে না এবং শপিং মল গুলো থেকেও বিরত থাকছে তাই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তাদের প্রয়োজনীয় নিত্য নতুন জামা আমার জামা কাপড় থেকে শুরু করে শাড়ি, কসমেটিক্স সবকিছু আমি আমার পেইজেই রাখছি । যাতে স্বাধ্যর মধ্যে একপেইজ থেকেই নিতে পারে।
পরিশেষে স্রোতাদের উদ্দ্যেশ্যে কিছু বলুন?
সবাইকে এটাই বলবো নিজের ইচ্ছা শক্তিকে মজবুত করতে হবে এবং সৎ নিয়তে নিজের উপর বিশ্বাস রেখে এগিয়ে যেতে হবে। আর বিশেষ একটা কথা আমাদের প্রতিটা নারীরই উচিত নিজের একটা সুন্দর পরিচয় গড়ে তোলা । কারো পরিচয়ে নই , নিজের পরিচয়ে পরিচিত হতে হবে । তাই আমরা যারা উদ্যোক্তারা নিজের একটা পরিচয় গড়ে তোলার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছি আমাদেরকে একটু সাপোর্ট করবেন এটাই আপনাদের থেকে কাম্য । আসুন সবাই সবার ব্যবসায়কে সম্মান করি ।